অনলাইনে আয় করার উপায় || প্রতিদিনের ব্যস্ততার পর আমরা কোন না কোন কারণে অনলাইন এ অর্থাৎ ইন্টারনেট দুনিয়ার প্রবেশ করি। সেটা ফেসবুক চালানোর জন্য হোক কিংবা ইউটিউব থেকে ভিডিও দেখানোর জন্যই হোক। অনলাইন থেকে আমরা যেমন অনেক কিছু জানতে এবং শিখতে পারি তেমনি অনলাইন থেকে আয় করারও অনেক মাধ্যম রয়েছে। অনলাইনে আয় করার জন্য অনেক কাজ রয়েছে কিন্তু সেই কাজগুলো শিখে আপনাকে সেই কাজগুলো করার জন্য স্কিল বাড়াতে হবে।
ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং এর কথা আপনি নিশ্চয়ই শুনে থাকবেন। তারা (ফ্রিল্যান্সারা) ঘরে বসে অনেক টাকা ইনকাম করতিছে। কিন্তু শুরুতে তারাও অনেক পরিশ্রম, কষ্ট, ধৈর্য ধরেছে। পরিশ্রম, ধৈর্য, কষ্ট ছাড়া কোন কাজেই সফলতা আসে না। তাই আপনাকে এই ফিল্ডে আসার জন্য অবশ্যই কঠোর পরিশ্রম, ধৈর্য ও কষ্ট করতে হবে। আর, আজকের এই টিউনে আমি আপনাদের সাথে অনলাইন থেকে আয় করার জন্য ৫ টি উপায় বলব। এই পাঁচটি উপায়ে আয় করা খুব সহজও না আবার কঠিনও না। কিন্তু, আপনাকে অবশ্যই ধৈর্য ধরে এবং পরিশ্রম করে কাজ করতে হবে।
ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে আগ্রহ আছে? জনতে চান ফ্রিল্যান্সিং কি? তাহলে এই আর্টিকেলটি পড়ুনঃ ফ্রিল্যান্সিং কি? ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন এবং উত্তর।
Table of Contents
অনলাইনে আয় করার উপায়
মনযোগ সহকারে সম্পূর্ণ টিউনটি পড়ুন। আপনার কাজে আসবে। অনলাইনে আয় করার জন্য সেরা ৫ টি উপায় আলোচনা করা হয়েছে।
ব্লগিং করে অনলাইনে আয়
আপনি যদি লং টাইম অনলাইনে আয় করতে চান তাহলে অবশ্যই ব্লগিং কে বেছে নেওয়া উচিত। ব্লগিংকরার জন্য আপনাকে একটি ওয়েবসাইট খুলে নিতে হবে এরপর নিয়মিত সেখানে কনটেন্ট লিখে পাবলিশ করতে হবে। ব্লগিং এর জন্য ওয়েবসাইট খোলার জন্য আপনি ব্লগার বা ওয়ার্ডপ্রেস বেছে নিতে পারেন। কেননা ব্লগার ও ওয়ার্ডপ্রেস ব্লগিং এর জন্য চমৎকার এবং জনপ্রিয় প্লাটফর্ম। ব্লগার থেকে আপনি ফ্রিতে একটি ব্লগ সাইট খুলতে পারবেন এবং সাথে একটি ফ্রি সাব-ডোমেইন (.blogspot.com) পাবেন। কিন্তু, ওয়ার্ডপ্রেস বেছে নিলে আপনাকে নিজের টাকায় হোস্টিং এবং ডোমেইন কিনে নিতে হবে। আপনি চাইলে ব্লগারেও একটি কাস্টম একটি ডোমেইন সংযুক্ত করতে পারেন। ওয়েবসাইট তৈরি নিয়ে আপনার যদি তেমন কোন ধারণা না থাকে বা ব্লগিং এর শুরুতে আপনি যদি টাকা খরচ করতে না চান তাহলে ব্লগার বেচে নিতে পারেন।
ওয়েবসাইট তৈরি করে ওয়েবসাইট থেকে আয় করতে চান? এই টিউনগুলো পড়ুন –
- ওয়েবসাইট কি? কত প্রকার ও কি কি? বিস্তারিত আলোচনা
- ওয়েবসাইট তৈরির আগে যে বিষয়গুলোর দিকে খেয়াল রাখা উচিত
- ওয়েবসাইট থেকে আয় করার উপায়
ব্লগিং নিয়ে তো আনেক কিছু বললাম। আসলে লিখতে ধরলে মাথায় যা আসে তাই লিখতে হয়। কিন্তু, একটি কথা বলা হয়নি। কি কথা? বলতে পারেন? ব্লগারকে কেন লং টাইম আর্নিং এর একটা মাধ্যম বললাম সেই কথা। ব্লগিং যখন আপনি শুরু করবেন তখন আপনার তেমন কোন আয় হবে না। কিন্তু, আপনাকে ধৈর্য ধরে নিয়মিত কনটেন্ট পাবলিশ করতে হবে। এরপর সাইটে যখন ভিজিটর বাড়বে তখন আপনার আয় বাড়তে থাকবে। একসময় আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন আপনার সাইট থেকে ডেইলি কি পরিমান আয় করা সম্ভব। আর এই আর্নিং আপনার পার্মানেন্ট থাকবে।
আর্টিকেল/ কন্টেন্ট রাইটিং
আর্টিকেল বা কন্টেন্ট রাইটিং ব্লগিংই। তবুও, এই পয়েন্টটিকে আলাদা করলাম। আপনি যদি নিজে ওয়েবসাইট খুলে ব্লগিং করতে না চান তাহলে লেখালেখি করে ইনকাম করতে পারেন। ৫০০ শব্দের একটি আর্টিকেল বা কনটেন্ট লিখে আপনি খুব অনায়েসে ৫ ডলার এর মতোন ইনকাম করতে পারেন। এজন্য আপনাকে এ বিষয়ে স্কিল আনতে হবে। শুধু যে লিখে দিলেন তা কিন্তু নয়। আপনাকে অবশ্যই কিছু ব্যাসিক এসইও জানতে হবে। আর্টিকেল বা কনটেন্টে কি-ওয়ার্ড ফোকাস করাতে হবে। সঠিক জায়গায় ইমেজের ব্যবহার করতে হবে। হেডিং ট্যাগ (h1, h2, h3, h4, h5, h6) এর সঠিক ব্যবহার, লিস্ট, টেবিল ইত্যাদি সঠিক জায়গায় যুক্ত করা ইত্যাদি বিষয় শিখে নিতে হবে।
আপনি কন্টেন্ট লেখার কাজ পেতে Elance, iWriter, WriterBay, FreelanceWriting, TextBroker, ExpressWriters.com, FreelanceWritingGigs.com মত সাইটে যেতে পারেন।
ঘরে বসে ওয়েবসাইট থেকে টাকা ইনকাম করতে চান তাহলে এই আর্টিকেলটি পড়ুন – টাকা ইনকাম করার ওয়েবসাইট 2023 [সেরা ৫ টি ওয়েবসাইট ১০০% ইনকাম হবে]।
ইউটিউবিং
এখন ইউটিউবিং করাও একটা পেশা বলা যেতে পারে। হাজার হাজার বললে বোধায় ভুল হবে লক্ষ লক্ষ ইউটিউবার ইউটিউবকে ফুল টাইম হিসাবে বেছে নিচ্ছে। এটা এমন একটা প্লাটর্ফম যেটা থেকে আপনি যেমন অনলাইনে আয় করতে পারবেন তেমনি আপনি ফেমাসিটিও পাবেন। আপনার যদি পিসি না থাকে তবুও কোন সমস্যা নেই হাতে থাকে স্মার্টফোনটি থেকে শুরু করতে পারেন। বেশিরভাগ সফল ইউটিউবারই ফোন দিয়েই তাদের ইউটিউবিং এর যাত্রা শুরু করেছে।
কিন্তু, কথা হচ্ছে কী ধরনের কনটেন্ট নিয়ে ইউটিউবিং শুরু করবেন? এক কথায় আপনার যে বিষয়ে স্কিল আছে সেই বিষয়টি সিলেক্ট করুন। আপনি হয়তো ভালো কমেডি করতে পারেন বা আপনি যুক্তি সহ কথা বলতে পারেন বা গেমিং এ আপনি এক্সপার্ট ইত্যাদি ইত্যাদি। তো, আপনার যেটি ভালো আপনি ইউটিউবে সেটি করুন। প্রথম প্রথম হয়তো ইউটিউবিং এর জন্য সাপোর্ট পাবেন না। ধৈর্য ধরুন অবশ্যই সফলতা পাবেন। আর হ্যাঁ, কখনো সাবস্ক্রাইব, টাকা আয় এই বিষয় গুলোকে টার্গেট করে ইউটিউবিং করবেন না। ভিউয়ার্সদের ভালো কিছু দেওয়ার চেস্টা করুন আপনা-আপনি এই জিনিসগুলো আপনি পাবেন।
এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
ছোট, মাঝারি, বড় অনেক প্রতিষ্ঠান অনলাইনে ব্যবসা করছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো অনলাইনের তাদের পণ্য বিক্রয় করে আসছে। তারা চায় তাদের এই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে যেন আরো মানুষ জানতে পারে এবং তদের পণ্য যেন আরো বেশি বিক্রয় হয়। আপনি চাইলে এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে তাদের পণ্য বিক্রয় করে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। এটা কিন্তু খুব সহজ আবার খুব কঠিন একটা কাজ নয়। আপনি সোসাল মিডিয়া বা আপনার ওয়েবসাইটে সেই পণ্য সম্পর্কে লিখে ভালো পরিমাণ সেল দিয়ে অনলাইনে আয় করতে পারবেন অতি সহজেই।
অফারঃ আজীবনের জন্য ফ্রিতে নিয়ে নিন হোস্টিং এবং ডোমেইন
শপিং এ একটির শার্টের দাম ১০০০ টাকা দেওয়া আছে আর এই শার্ট আপনি যদি বেচে দেন তাহলে আপনি পাবেন ৩০% কমিশন। অর্থাৎ, ৩০০ টাকা পাবেন একটি শার্ট বেচলে। আপনি যদি এই শার্ট আপনার দুইজন বন্ধুদের কিনতে বলে তাহলে অনায়েসে আপনি ৬০০ টাকা ইনকাম করে ফেলবেন। বিভিন্ন জায়গায় এই শার্ট সম্পর্কে বললেন তারা যদি এটি অর্ডার করে/ কেনে তাহলে আপনি আরো অনলাইনে আয় করবেন। শুধুমাত্র শার্ট নয় অরো অনেক পণ্য, জিনিসের এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারবেন আপনি।
পিটিসি সাইট থেকে অনলাইনে আয়
পিটিসি (PTC) মানে হল (Paid To Click) পেইড টু ক্লিক। মানে আপনি এই সাইটগুলো তে যতগুলো অ্যাডে ক্লিক করবেন তার বিপরীতে আপনি নির্দিষ্ট ডলার পাবেন। পিটিসি সাইটে আপনাকে বিজ্ঞাপনের লিঙ্কে ক্লিক করতে হবে এবং ১০ থেকে ৩০ সেকেন্ডের জন্য বিজ্ঞাপন দেখতে হবে। আপনার দেখা প্রতিটি বিজ্ঞাপনের জন্য পিটিসি সাইট আপনাকে অর্থ প্রদান করবে।
আপনি যদি অনলাইনে অর্থ উপার্জন করার চেষ্টা করে থাকেন এবং খুব সহজ এবং ঝামেলা ছাড়া কিছু টাকা ইনকাম করতে চান এই যেমন ১০০ ডলার বা তার কম তাহলে আপনার জন্য পিটিসি সাইটগুলো হতে পারে সর্বোত্তম উপায়।
শেষ কথা
অনলাইন থেকে ইনকাম করতে হলে আপনাকে অবশ্যই চোখ-কান খোলা রেখে কাজ করতে হবে। কেননা, এখানে যেহেতু সরারসরি দেখা সাক্ষাৎ এর কোন উপায় নেই। অনলাইনে আপনি কাজ পাবেন, অনলাইনে কাজ করে দিবেন এবং অনলাইনের পেমেন্ট পাবেন। তাই প্রতারিত হওয়ারো সুযোগ থাকে। তাই বিশ্বস্ত কোন প্লাটফর্ম থেকে কাজ করার চেস্টা করবেন। আর, আপনার সন্দেহ হলে সেই কাজটি নিবেন না।
তাহলে, আজ থেকে শুরু হয়ে যাক আপনার অনলাইন থেকে ইনকাম করা। আপনি যদি এই ধরনের আরো কনটেন্ট চান তাহলে অবশ্যই টিউনবিএন এ নিয়মিত ভিজিট করুন। আর, এই কনটেন্টি আপনার কেমন লাগল তা জানাতে অবশ্যই কমেন্ট করবেন এবং সম্ভব হলে আপনি আপনার বন্ধু-বান্ধবদের সাথে শেয়ার করুন যাতে তারাও তাদের অনলাইন ইনকাম শুরু করতে পারে ও আরো নতুন কিছু জানতে পারে।