নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম ২০২৩
নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে এই আর্টিকেলে। আপনি যদি নতুন ভোটার আইডি কার্ড করতে চান তাহলে আর্টিকেলে দেখানো নিয়ম অনুসরণ করে সহজেই নতুন ভোটার আইডি কার্ড করতে পারবেন। ছবিসহ প্রতিটি ধাপ বর্ণনা করা হয়েছে, যার ফলে ধাপগুলো বুঝতে আপনার অনেক সুবিধা হবে এবং সহজেই নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম শিখে ভোটার আইডি কার্ড করতে পারবেন।
প্রতিবছর অসংখ্য যুবক-যুবতী ভোটার হন। অর্থাৎ তাদের বয়স ১৮ হয়। ১৮ বছর বয়স হলে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নতুন ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করে ভোটার আইডি কার্ড পাওয়া যায়। আবার, অনেকেই আছে যারা অনেক আগেই ভোটার হয়েছে তবে এখনো আইডি কার্ড পান নি। কিন্তু বর্তমানে তার ভোটার আইডি কার্ড প্রয়োজন। এক্ষেত্রে একটি উপায় হলো ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করে ভোটার আইডি কার্ড নেওয়া।
আরো পড়ুনঃ
- কিভাবে ভোটার তালিকা ডাউনলোড করব
- আইডি কার্ড বের করার নিয়ম ২০২৩
- আমার ভোটার আইডি কার্ড দেখতে চাই | কিভাবে দেখবেন তা নিয়ে বিস্তারিত
- নিজেই নিজের ভোটার আইডি কার্ড দেখবো কিভাবে 2023
- মোবাইল নাম্বার দিয়ে জাতীয় পরিচয় পত্র বের করার নিয়ম
ভোটার আইডি কার্ড করার জন্য নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া রয়েছে। কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রের প্রয়োজন পড়বে। আপনার এলাকার কাউন্সিলারের সাক্ষরের প্রয়োজন পড়বে। তবে ভোটার আইডি কার্ড করার জন্য সবার আগে এর জন্য অনলাইনে আবেদন করতে হবে। অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে পিডিএফ ডাউনলোড করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করে এলাকার নির্বাচন কমিশনার অফিসে জমা দিতে হবে। জমা দেওয়ার পর আপনার তথ্য ভেরিফিকেশনের পর তা যদি গ্রহণ করা হয় তাহলে আপনাকে ছবি, ফিঙ্গার প্রিন্ট ও আইরিশ স্ক্যান করার জন্য ডাকা হবে। যাকে বায়োমেট্রিক তথ্য হালনাগাদ বলা হয়। বায়োমেন্ট্রিক তথ্য হালনাগাদ হয়ে গেলে আপনি নতুন ভোটার আইডি কার্ড পেয়ে যাবেন।
সংক্ষেপে তো নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিলেন এবার চলুন এই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনায় আসা যাক।
Table of Contents
নতুন ভোটার আইডি কার্ড করতে যা যা লাগবে
নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম সম্পর্কে জানার আগে আমাদের জেনে নেওয়া প্রয়োজন কি কি লাগবে এই নতুন আইডি কার্ডটি করতে। যে সকল জিনিস লাগবে তার তালিকা নিম্নে দেওয়া হলো –
ক্রমিক নং | ডকুমেন্টের নাম | প্রয়োজনীয়তা |
---|---|---|
১ | ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন | অবশ্যিক |
২ | পিতা মাতার ভোটার আইডি কার্ড | আবশ্যিক |
৩ | বিদ্যুৎ/ গ্যাস বিলের কাগজ | অবশ্যিক |
৪ | এসএসসি/ এইচএসসি সার্টিফিকেটের ফটোকপি | শিক্ষার্থী হলে |
৫ | ব্লাড গ্রুপের কাগজ | ক্ষেত্র বিশেষ |
নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম
প্রতি বছর Bangladesh NID Application System ওয়েবসাইটে কোন না কোন আপডেট আসে। নতুন আপডেট আসলে নতুন নিয়ম অনুসরণ করে ভোটার আইডি কার্ড করতে হয়। ২০২৩ সালের জন্য যে নতুন নিয়ম রয়েছে সেই নিয়ম অনুযায়ী আমরা জানব। যা অনুসরণ করে আপনি নতুন ভোটার আইডি কার্ড করতে পারবেন।
নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম অনেক সহজ ধাপগুলো অনুসরণ করুন তাহলে সহজে করতে পারবেন। আর কোথাও আটকে গেলে চিন্তা করবেন না। আমি আসি তো। সমস্যার কথা কমেন্টে জানাবেন সমাধান দেওয়ার চেস্টা করব।
ধাপ ১ঃ services.nidw.gov.bd ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন
নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার জন্য আপনাকে প্রথমে services.nidw.gov.bd (Bangladesh NID Application System) ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে হবে। এই ওয়েবসাইটে ভিজিট না করে আপনি নতুন ভোটার আইডি করতে পারবেন না। ওয়েবসাইটিতে ভিজিট করে অনলাইনে ফরম পূরণ করার মাধ্যমে আমরা নতুন ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করব। ওয়েবসাইটের লিংক – https://services.nidw.gov.bd/nid-pub/?locale=en।
ধাপ ২ঃ Get Started এ ক্লিক করুন
উপরে দেওয়া লিংক ভিজিট করে ওয়েবসাইটিতে ভিজিট করার পর আপনি উপরের স্কিনশটের মতোন একটি পেজ দেখতে পারবেন। সাথে সেখানে Get Started নামের একটি বাটন পাবেন। যেহেতু আমরা নতুন ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করব তাই আমাদের এখানে ক্লিক করতে হবে। তো আপনি Get Start বাটনে ক্লিক করুন ও পরবর্তী ধাপে যান।
ধাপ ৩ঃ নাম ও জন্ম তারিখ দিন
Get Started বাটনে ক্লিক করার পর আপনি উপরের স্কিনশটের মতোন একটি পেজ দেখতে পারবে। এই পেজে আপনার কাছ থেকে দুইটি তথ্য চাইবে। আপনার নাম এবং আপনার জন্ম তারিখ। জন্ম নিবন্ধন কার্ড অনুযায়ী আপনার পূর্ণ নাম ইংরেজিতে লিখে দিন এবং জন্ম তারিখ সিলেক্ট করে দিন।
এই দুইটি তথ্য দেওয়া হলো ক্যাপচার সলভ করে Continue বাটনে ক্লিক করুন। ক্যাপচার সলভ করা অনেক সহজ। শেষের ইনপুট বক্সের উপরে একটি ছবি দেখতে পারবেন সেই ছবিতে যা লেখা থাকবে সেটি ঠিক সেইভাবে ইনপুট বক্সে লিখে দিবেন।
ধাপ ৪ঃ মোবাইল নাম্বার দিন
Continue করার পর নতুন একটি পেজ আসবে। এই পেজে আপনার কাছ থেকে আপনার মোবাইল নাম্বার চাওয়া হবে। এখানে আপনি আপনার ব্যবহার করা মোবাইল নাম্বারটি দিবে। অবশ্যই সঠিক মোবাইল নাম্বারটি দিবেন। কেননা মোবাইল নাম্বার ভেরিফেকশন করতে হবে এবং পরবর্তীতে আপনার ভোটার আইডি কার্ড সম্পর্কিত আপডেট এই নাম্বারে কল বা এসএমএসের মাধ্যমে জানানো হবে। মোবাইল নাম্বার দেওয়া হয়ে গেলে Send SMS বাটনে ক্লিক করুন পরবর্তী ধাপে যাওয়ার জন্য।
ধাপ ৫ঃ ভেরিফেকেশন কোড বসান
Send SMS বাটনে ক্লিক করার পর আপনাকে নতুন একটি পেজে নিয়ে যাবে এবং সাথে আপনার দেওয়া মোবাইল নাম্বারে একটি ভেরিফিকেশন কোড আসবে। ভেরিফিকেশন কোডটি ছয় ডিজিটের হবে। কোডটি ইনপুট বক্স বসিয়ে দিয়ে Continue বাটনে ক্লিক করুন। যদি কোন কারণে কোড না আসে তাহলে Re-send বাটনে ক্লিক করবেন।
ধাপ ৬ঃ ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড দিন
মোবাইল নাম্বার ভেরিফিকেশন ধাপ সম্পন্ন শেষে আপনার ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড দিতে বলবে। ইউনিক একটি ইউজারনেম দিবেন এবং শক্তিশালী একটি পাসওয়ার্ড দিবে। পাসওয়ার্ড দেওয়ার দুইটি বক্স থাকবে। একই পাসওয়ার্ড দুইটি বক্সে টাইপ করতে হবে। পাসওয়ার্ডের প্রথম বক্সে যে পাসওয়ার্ডটি দিবে দ্বিতীয় বক্সেও সেই পাসওয়ার্ডটি দিতে হবে। বসানো হয়ে গেলে Continue বাটনে ক্লিক করবেন।
ধাপ ৭ঃ Profile Details এ ক্লিক করুন
Continue বাটনে ক্লিক করার পর আপনাকে ড্যাশবোর্ডে নিয়ে যাবে। এই পর্যায়ে আপনার অ্যাকাউন্ট তৈরি করা সম্পন্ন হয়েছে। ইউজারনামে ও পাসওয়ার্ড ভালোভাবে সংরক্ষণ করে রাখুন। কেননা পরবর্তী লগিনে প্রয়োজন পড়বে। ড্যাশবোর্ডে আপনি Profile Details নামক একটি বাটন দেখতে পারবেন। এবার এই বাটনে ক্লিক করুন।
ধাপ ৮ঃ তথ্য আপডেট করুন
Profile Details এ ক্লিক করার পর আপনাকে এক এক করে সকল তথ্য আপডেট করতে হবে। প্রথমে Information তারপর Documents এবং সবশেষে Confirmation। Information সেকশনের Personal Information, Identification Information এবং Address দিতে হবে। সময় নিয়ে ধীরে ধীরে এ তথ্য গুলো পূরণ করবেন। বানানের দিকে খেয়াল রাখবেন। জন্ম নিবন্ধন কার্ডের সাথে মিল রেখে সকল তথ্য ইনপুট করবেন।
প্রতিটি সেশনের তথ্য আলাদা আলাদা ট্যাবে ক্লিক করে দিতে হবে এবং নতুন সেকশনে যাওয়ার জন্য Next বাটনে ক্লিক করবেন। যদি কোন ডকুমেন্ট আপলোড করতে বলে তাহলে তা আপলোড করে দিবেন এবং সবশেষে Confirm সেকশনে গিয়ে Submit বাটনে ক্লিক করবেন।
ধাপ ৯ঃ Download বাটনে ক্লিক করে ডাউনলোড করুন
Download বাটনে ক্লিক করা শেষে নতুন ভোটার আইডি কার্ড আবেদন ফরম ডাউনলোড হবে। এবার এই ফরমটিকে প্রিন্ট করে নিন। প্রিন্ট করা শেষ ফরমে থেকে কিছু তথ্য যেগুলো পূরণ করা বাকী আছে সেগুলো কালো বলপেন দিয়ে পূরণ করে নিন।
ধাপ ১০ঃ নির্বাচন কমিশনার অফিসে গিয়ে জমা দিন
সবশেষে প্রিন্ট করা ফরমটি এবং সাথে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে নির্বাচন কমিশনার অফিসে গিয়ে জমা দিন। অবশ্যই কাগজপত্রগুলো সত্যায়িত কপি হতে হবে এবং ডাউনলোড করা ফাইলটিতে প্রিন্ট করার পর আপনার এলাকার কাউন্সিলারের সাক্ষর ও সিল লাগিয়ে নিতে হবে।
ধাপ ১১ঃ বায়োমেট্রিক তথ্য হালনাগাদ
নির্বাচন কমিশনার অফিসে সকল তথ্য জমাদানের পর আপনার তথ্য গুলো যাচাই করা হবে। যাচাই বাচাই শেষে আপনার আবেদন যদি গ্রহণ করে তাহলে আপনাকে বায়োমেট্রিক হালনাগাদের জন্য ডাকা হবে। আপনি যে নাম্বারের এসএমএস বা কল করে আপনাকে জানানো হবে। আপনাকে যে তারিখে ডাকা হবে সেই তারিখে গিয়ে বায়োমেট্রিক তথ্য হালনাগাদ করে আসতে হবে।
বায়োমেন্ট্রিক তথ্য হালনাগাদ বলতে আপনার ছবি তোলা, আঙ্গুলের ছাপ নেওয়া ও চোখে আইরিশ স্ক্যানকে বোঝানো হয়েছে।
ফলাফলঃ নতুন ভোটার আইডি কার্ড
সকল প্রক্রিয়া সঠিকভাবে সম্পন্ন করা শেষে আপনি নতুন ভোটার আইডি কার্ড পেয়ে যাবে। স্মার্ট কার্ডটি হাতে পেতে কিছুদিন সময় লাগবে। তবে সব কিছু এপ্রুভ হলে আপনি অনলাইন থেকে আইডি কার্ড ডাউনলোড করে সেটি দিয়ে কাজ চালাতে পারবেন।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী
নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম নিয়ে লেখা আর্টিকেলটি সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন ও প্রশ্নের উত্তর চলুন জেনে নেই।
ভোটার আইডি কার্ড অনলাইনে কিভাবে পাব?
আর্টিকেলে দেখানো নিয়ম অনুসরণ করে আপনি ভোটার আইডি কার্ড অনলাইন থেকে ডাউনলোড করে নিতে পারবেন অর্থাৎ ভোটার আইডি কার্ড পেয়ে যাবেন।
নতুন ভোটার আইডি কার্ড করতে কি কি লাগে?
নতুন ভোটার আইডি কার্ড করতে ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন, পিতা মাতার ভোটার আইডি কার্ড, বিদ্যুৎ/ গ্যাস বিলের কাগজ ইত্যাদি ডকুমেন্ট লাগবে।
নতুন ভোটার আইডি কার্ড কত দিনের মধ্যে পাওয়া যায়?
নতুন ভোটার আইডি কার্ড সাধারণত আবেদন করার ১৫ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে পাওয়া যায়।
উপসংহার
আর্টিকেলটিতে নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। নিয়মগুলো অনুসরণ করে আপনি অতি সহজেই ভোটার আইডি কার্ড করতে পারবেন। আর্টিকেলটি নিয়ে আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করুন আমি চেস্টা করব আপনার প্রশ্নের যথাযত উত্তর দেওয়ার।
ধন্যবাদ আপনাকে টিউনবিএনে ভিজিট করে আমাদের সাথে থেকে আর্টিকেলটি পড়ার জন্য। এই ধরনের আরো অনেক আর্টিকেল পেতে নিয়মিত ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইটে। সম্ভব হলে আর্টিকেলটি শেয়ার করুন আপনার বন্ধু-বান্ধবের সাথে যাতে তারাও এই সম্পর্কে জানতে পারে।