ছাড়পত্রের জন্য আবেদন [লেখার নিয়ম সহ, স্কুল, কলেজ, চাকরি সকল]
ছাড়পত্রের জন্য আবেদনকে আমরা সাধারণভাবে টিসির (TC – Transfer Certificate) জন্য আবেদন হিসাবে। কোন শিক্ষার্থী যদি এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে যদি অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে চায় সেক্ষেত্রে ছাড়পত্রের প্রয়োজন পড়ে। একই বিষয় চাকুরীরত কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। কোন ব্যক্তি যদি চাকুরী ছেড়ে দিয়ে অন্য কোন চাকুরীতে যুক্ত হতে চায় তবে তারও ছাড়পত্রের প্রয়োজন হবে।
তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (বিদ্যালয়, কলেজ) ছাড়পত্রের ব্যবহার বেশী। ছাড়পত্র পেতে হলে অবশ্যই যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করতে হবে। আবেদন গ্রহণ করা হলে সেই ব্যক্তি বা শিক্ষার্থী ছাড়পত্র পেয়ে যাবে।
তবে অনেকেই আছি যারা ছাড়পত্র লেখার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে অবগত নই। আমাদের এই আর্টিকেলটিতে ছাড়পত্রের জন্য আবেদন লেখার নিয়ম ও ছাড়পত্রের জন্য আবেদনের নমুনা শেয়ার করব। যা অনুসরণ করে আপনি সহজেই ছাড়পত্র লিখতে পারবেন। তার পাশাপাশি আর্টিকেলে থাকা নমুনা ছাড়পত্রের তথ্য পরিবর্তন করে ব্যবহার করতে পারবেন।
তাহলে চলুন আমাদের এই আর্টিকেলটি থেকে ছাড়পত্রের জন্য আবেদন সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য দেখে নেওয়া যাক।
Table of Contents
ছাড়পত্রের জন্য আবেদন লেখার নিয়ম
ছাড়পত্রের জন্য আবেদন দেখার আগে এটি লেখার নিয়ম সম্পর্কে চলুন জেনে নেই। ছাড়পত্র লেখা সাধারণ সকল আবেদন পত্রের মতোন। সাধারণ আবেদন পত্র যেভাবে লিখতে হয় ঠিক সেইভাবেই আপনাকে ছাড়পত্রের জন্য আবেদন লিখতে হবে। যদি আপনি আবেদন লেখার নিয়ম সম্পর্কে না জানেন তবে আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এই আর্টিকেলটি পড়ে এ বিষয়টি সম্পর্কে জেনে নিন – আবেদন পত্র লেখার নিয়ম।
এছাড়া ছাড়পত্রের জন্য আবেদন লেখার সময় কিছু বিষয়ের উপর গুরুত্ব দিতে হবে। যেমনঃ আপনি বিদ্যালয়ে কত বছর যাবত পড়াশুনা করেছেন, বর্তমানে কোন শ্রেণিতে অধ্যয়নরত অবস্থায় রয়েছেন, কেন আপনার ছাড়পত্রের প্রয়োজন। এ বিষয়গুলো ছাড়পত্রের আবেদনে স্পষ্ট রাখতে হবে।
সুন্দর, পরিষ্কার একটি সাদা কাগজে আবেদন পত্রটি কালো বল কালি দিয়ে লিখতে হবে এবং আবেদনের শেষে অবশ্যই অভিভাবকের সাক্ষর থাকতে হবে। আর আবেদন পত্রটি নিজে গিয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট জমা দিতে হবে। ছাড়পত্র আবেদনের একটি নমুনা আবেদন পত্র –
ছাড়পত্রের জন্য আবেদন
এবার চলুন কিছু নমুনা ছাড়পত্রের জন্য আবেদন দেখে নেওয়া যাক। ছবি সহ ছাড়পত্রগুলো রয়েছে। আপনি চাইলে তথ্য পরিবর্তন করে ছাড়াপত্রগুলি ব্যবহার করতে পারবেন।
তারিখঃ ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
বরাবর
প্রধান শিক্ষক
দিনাজপুর জিলা স্কুল, দিনাজপুর।
বিষয়ঃ ছাড়পত্রের জন্য আবেদন
জনাব,
বিনীত নিবেদন এই যে, আমি আপনার বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ‘ক’ শাখার একজন নিয়মিত ছাত্র। আমি আমার পরিবার সহ দিনাজপুর জেলার বসবার করি। আমার বাবা একজন সরকারি চাকুরীজীবি। গত ০৯/০২/২০২৩ ইং তারিখে তিনি রংপুর জেলার বদলি হন। ফলে আমাদেরকে পরিবারসহ সেখানে স্থানান্তরিত হতে হবে। দিনাজপুরে আমার কোন অভিভাবক না থাকায় আমার পক্ষে একাই দিনাজপুরে থেকে পড়াশুনা করা সম্ভব নয়।
অতএব, বিনীত প্রার্থনা এই যে, আমাকে ছাড়পত্র দানে বাধিত করবেন।
নিবেদক
আপনার একান্ত অনুগত ছাত্র
মোঃ আব্দুর রহমান
শ্রেণিঃ অষ্টম, শাখাঃ ক
রোলঃ ১২
এই আবেদন পত্রটি লেখা শেষে অভিভাবকের সাক্ষর নিয়ে জমা দিতে হবে। অন্যথায় আবেদন পত্রটি গ্রহণ নাও হতে পারে।
আপনার জন্য আরো একটি ছাড়পত্রের আবেদনের নমুনা কপির ছবির নিম্নে দিয়ে দিলাম। নিম্নে এটি দিয়ে দেওয়া হলো, এখান থেকে আবেদন পত্রটি দেখে নিন। তথ্য পরিবর্তন করে আবেদন পত্রটি ব্যবহার করতে পারবেন।
স্কুল থেকে ছাড়পত্রের জন্য আবেদন
স্কুল থেকে ছাড়পত্রের জন্য আবেদনের একটি নমুনা কপি দেওয়া হলো।
১১/০২/২০২৩ ইং
বরাবর
প্রধান শিক্ষক
ক্যান্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, সৈয়দপুর
বিষয়ঃ ছাড়পত্রের জন্য আবেদন
জনাব,
সবিনয় নিবেদন এই যে, আমি আপনার বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের একজন নিয়মিত ছাত্র। আমার পিতা একজন সরকারি কর্মকর্তা। তিনি দীর্ঘদিন সৈয়দপুর জেলায় সোনালী ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন। কিন্তু, সরকারি নির্দেশনায় আগামী মাসের ১ তারিখে তাকে ময়মনসিংহ জেলায় বদলি হতে হবে। আমি আমার পরিবারের সাথে সৈয়দপুর জেলায় বসবাসরত ছিলাম। আমার পরিবার ইতিমধ্যে ময়মনসিংহ জেলায় স্থানান্তরিত হচ্ছে। ফলে সৈয়দপুরে থেকে আমার পক্ষে আপনার বিদ্যালয়ে পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।
অতএব, মহাদোয়ের নিকট বিনীত প্রার্থনা এই যে, আমাকে ছাড়পত্র দানে বাধিত করবেন যাতে ময়মনসিংহ জেলায় গিয়ে ময়মনসিংহ ক্যান্ট পাবলিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারি।
নিবেদক
আপনার একান্ত অনুগত ছাত্র
মোঃ আরিফুল ইসলাম
শ্রেণিঃ দশম, বিভাগঃ বিজ্ঞান
শাখাঃ ক, রোলঃ ২৫
চাকরির ছাড়পত্রের জন্য আবেদন
চাকরির ছাড়পত্রের আবেদনও সাধারণ সকল আবেদন পত্রে মতোন হবে। তবে সেখানে চাকরি সংক্রান্ত বিষয়বস্তু সম্পর্কে আলোচনা থাকবে। কে কারণে আপনি চাকুরি ছাড়তে চান, কোন পদে চাকুরি করতেন, কত সময় ধরে চাকুরীতে যুক্ত ছিলেন ইত্যাদি বিষয় এ ছাড়পত্রে যুক্ত করতে হবে।
উপসংহার
আশা করছি ছাড়পত্রের জন্য আবেদন নিয়ে লেখা এই আর্টিকেলটি আপনার ভালো লেগেছে এবং আর্টিকেলটি থেকে এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য পেয়েছেন। আর্টিকেলটি আপনার কাছে কেমন লেগেছে সেই সম্পর্কে মতামত জানাতে কমেন্ট করুন।
ধন্যবাদ আপনাকে টিউনবিএনে ভিজিট করে আমাদের সাথে থেকে আর্টিকেলটি পড়ার জন্য। ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেজ /TuneBN.Official কে যাতে নতুন সকল আর্টিকেলের আপডেট সহজে পেয়ে যান।