Jonmo NibondhonFeaturedGovernment Info

জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার সঠিক নিয়ম দেখে নিন | অনলাইনে PDF সহ

জন্ম নিবন্ধন যাচাই করতে চান অনলাইনে কিংবা অফলাইনে? কিন্তু জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার সঠিক নিয়ম আপনার জানা নেই? যদি না জানা থাকে তাহলে এই আর্টিকেলটি থেকে আপনি জন্ম নিবন্ধন সম্পর্কে সকল তথ্য আপনি এই আর্টিকেলটি থেকে পেয়ে যাবেন।

জন্ম নিবন্ধন সনদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সরকারি ডকুমেন্ট। বর্তমান সময়ে অনলাইনের মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধনে জন্য আবেদন করা যায়। আর সঠিকভাবে জন্ম নিবন্ধন সনদ রেজিস্ট্রেশন হয়েছে কি না তা একমাত্র অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার মাধ্যমে জানা সম্ভব। যদি সঠিকভাবে জন্ম নিবন্ধন করা হয়ে থাকে তাহলে অনেক সহজেই এর যাচাই কপি ডাউনলোড করা যাবে।

তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে Jonmo Nibondhon Sonod Jacai করতে হয়। তবে, জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার আগে আমাদের এই সম্পর্কে জেনে নেওয়া প্রয়োজন। যেমনঃ জন্ম নিবন্ধন আসলে কি, এটির ব্যবহার কি, কিভাবে জন্ম সনদ কপি বের করতে হবে, কোন কোন ক্ষেত্রে এর ব্যবহার রয়েছে, এটি থাকার উপকারিতা ও না থাকার অপকারিতা ইত্যাদি ইত্যাদি। চলুন আগে এসব খুঁটিনাটি বিষয় সম্পর্কে জেনে নেই।

জন্ম নিবন্ধন নিয়ে আমাদের ওয়েবসাইটে আরো কিছু আর্টিকেল ইতিমধ্যে প্রকাশ করা হয়েছে। আপনি চাইলে এই সকল আর্টিকেলগুলো পড়তে পারেন –

জন্ম নিবন্ধন সনদ কি?

জন্ম নিবন্ধন একে ইংরেজিতে Birth Certificate বলা হলা হয়ে থাকে। সহজ ভাষায় জন্ম নিবন্ধন হলো সরকার অনুমোদিত একটি কাগজ যা আপনার বয়স প্রমাণ করে এবং এর সাথে প্রমাণ করে আপনি সেই দেশের নাগরিক। এছড়াও জন্ম নিবন্ধনে পিতা মাতার নামও উল্লেখ থাকে।

অর্থাৎ আমরা বলতে পারি জন্ম নিবন্ধন সনদ হলো জন্ম তারিখ ও স্থান নির্দেশকারী সরকারী অনুমোদিত একটি ডকুমেন্ট।

জন্ম নিবন্ধন সনদে বিভিন্ন ধরণের তথ্য থাকে। এগুলো হলো –

  • যার জন্ম নিবন্ধন তার নাম
  • তার পিতা ও মাতার নাম
  • জন্মস্থানের ঠিকানা
  • জন্ম তারিখ, মাস ও বছর
  • ও একটি ইউনিক জন্ম নিবন্ধন নাম্বার

জন্ম নিবন্ধন সনদের ব্যবহার

বিভিন্ন ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন সনদের ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যাদের বয়স ১৮ বছরের নিচে তাদের জন্য এটি অত্যাধিক গুরুত্বপূর্ণ। আর যাদের বয়স ১৮ এর অধিক এবং ভোটার আইডি কার্ড রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এটি খুব বেশী কাজে লাগে না। নিম্নে জন্ম নিবন্ধন সনদের কিছু ব্যবহার তুলে ধরা হলো –

  • স্কুল/ কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে
  • ব্যাংক অ্যাকাউন্ট তৈরিতে (১৮ এর নিচে)
  • বিভিন্ন সরকারি ভাতা পেতে
  • উপবৃত্তির আবেদনের ক্ষেত্রে
  • বিবাহের ক্ষেত্রে

জন্ম নিবন্ধন সনদের উপকারিতা

জন্ম নিবন্ধন সনদ সকলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রয়োজনীয় একটি ডকুমেন্ট। এটির মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন ধরনের সেবা পেয়ে থাকি ও এর উপকারিতাও রয়েছে। চলুন এর কিছু উপকারিতা জেনে নেই।

  • জন্ম নিবন্ধন সনদ দ্বারা আপনি কোন দেশে জন্মগ্রহণ করেছেন তার প্রমাণ পাওয়া যায় এবং সেই দেশের নাগরিকত্ব পাওয়া সম্ভব।
  • সরকারি সেবা ও ভাতা পাওয়া যায়। ইত্যাদি।

আপনি কি অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসে ইনকাম করতে চান কিংবা ব্যবসা শুরু করতে চান? তাহলে এই আর্টিকেলগুলো পড়ুন –

জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার নিয়ম

এবার চলুন জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার সঠিক নিয়ম জেনে নেওয়া যাক। আমি স্কিনশট সহকারে ধাপে ধাপে তা উল্লেখ করছি। আপনি শুধু ফলো করুন। তাহলে আপনি খুব সহজেই জন্ম নিবন্ধন যাচাই করতে পারবেন। যদি যাচাই করতে কোনরূপ সমস্যা হয় তাহলে আমার সাথে যোগাযোগ করবেন অথবা নিচে কমেন্ট করবেন। তো চলুন ধাপগুলো একে একে শুরু করা যাক।

ধাপ ১ঃ জন্ম নিবন্ধন সনদ হাতে নিন

আপনার যদি ইতিমধ্যে একটি হার্ড কপি থেকে থাকে তাহলে সেটিকে বের করে আপনার হাতে নিন। কেননা এই হার্ড কপিতে থাকা জন্ম নিবন্ধন ইউনিক আইডিটি ও জন্ম তারিখ, মাস ও সাল আমাদের কাজে লাগবে যাচাই করণে। যদি এটি আপনার কাছে না থাকে তাহলে সমস্যা নেই। ইউনিক আইডি ও জন্ম তারিখ মনে থাকলে চলবে।

ধাপ ২ঃ ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন

জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার ওয়েবসাইটের স্কিনশট

এবার, অনলাইনের সাহায্যে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করতে হলে আমাদেরকে এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে আগে ভিজিট করতে হবে। জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে যাচাই করার ওয়েবসাইটের নাম হলো BDRIS বা Office of the Registrar General, Birth and Death Registration। গুগলে গিয়ে BDRIS লিখে সার্চ করলে অফিশিয়াল ওয়েবসাইটের লিংক পাবেন। অথবা এই লিংক ক্লিক করে সরাসরি ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। ওয়েবসাইটের লিংক – https://everify.bdris.gov.bd/

ধাপ ৩ঃ ডেটা ইনপুট করতে হবে

লিংক ভিজিট করার পর আপনাকে এখানে দুইটি ডেট ও ক্যাপচার ইনপুট করতে হবে। ডেটা দুইটি হলো –

  1. Birth Registration Number
  2. Date of Birth (YYYY-MM-dd)

ডেটা দুইটি ইনপুট করার পর ক্যাপচার পূরণ করতে হবে।

লক্ষ্য করুনঃ আপনার জন্ম নিবন্ধন রেজিস্ট্রেশন নাম্বার অবশ্যই ১৭ ডিজিটের হতে হবে এবং জন্ম তারিখ বছর-মাস-তারিখ এই ফরমেটে বসাতে হবে এবং সব কিছু ইংরেজিতে হবে। উদাহরণঃ 2002-05-18

ধাপ ৪ঃ সার্চ (Search) করুন

সঠিক ভাবে ডেটা পূরণ করার পর আপনি দুইটি বাটন পাবেন একটি হলো Search এবং অপরটি Clear বাটন। আপনি এখান থেকে সার্চ বাটনে ক্লিক করুন।

সার্চ বাটনে ক্লিক করার পর আপনার সকল ডেটা যদি সঠিক হয় তাহলে আপনার অনলাইন জন্ম নিবন্ধন কপি আপনার সামনে চলে আসবে। এখান থেকে জন্ম নিবন্ধন সনদ যাচাই করার সকল তথ্য পেয়ে যাবেন। এভাবে আপনি খুব সহজে ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করতে পারবেন। যদি আপনার জন্ম নিবন্ধনটি খুঁজে না পায় বা কোন error আসে তাহলে একটু ক্রল করে আর্টিকেলে দেওয়া প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নগুলো পড়ুন।

জন্ম নিবন্ধন যাচাই কপি

উপরোক্তে দেখানো ধাপগুলো অনুসরণ করে আপনি জন্ম নিবন্ধন যাচাই কপি পেতে পারেন। জন্ম নিবন্ধন কপি প্রিন্ট করার জন্য আপনাকে কম্পিউটারের সহায়তা নিয়ে হবে। ডাউনলোড কপিটি বের করে আপনাকে কি বোর্ড থেকে ctrl+p বাটনে ক্লিক করলে তার প্রিন্ট করা শুরু হয়ে যাবে।

আপনি যদি আসল দেখতে হার্ডকপি জন্ম নিবন্ধন সনদ চান সেক্ষেত্রে আপনাকে এর জন্য আবেদন করতে হবে। সঠিক ভাবে আবেদন করার পর এর হার্ড কপি আপনাকে আপনার এলাকার জেলা পারিষদ কার্যালয় থেকে নিয়ে আসতে হবে।

জন্ম তারিখ দিয়ে জন্ম নিবন্ধন যাচাই

শুধুমাত্র জন্ম তারিখ দিয়ে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করা সম্ভব না। জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার জন্য দুইটি জিনিসের প্রয়োজন –

  1. জন্ম নিবন্ধন নাম্বার
  2. জন্ম তারিখ

এই দুইটি জিনিসের কোন একটি জানা না থাকলে কোনভাবেই আপনি অনলাইনে যাচাই করতে পারবেন না।

আরো পড়ুনঃ

জন্ম নিবন্ধন যাচাই অনলাইন চেক Apps

শুধুমাত্র ওয়েবসাইট থেকেই জন্ম নিবন্ধন সনদ যাচাই করা যায়। এর জন্য কোন অ্যাপের ব্যবস্থা নেই। আপনি এ নিয়ে প্লে-স্টোর কিংবা অন্যান্য প্লাটফর্মে যে সকল Apps পাবেন তা ভুয়া বলা চলে। এসব অ্যাপ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। এসব অ্যাপ দিয়ে Jonmo Nibondhon Jacai করলে আপনার তথ্য হাতিয়ে নিতে পারে তারা। আর এই কাজ মোবাইল ফোনের ব্রাউজারের মাধ্যমে সহজেই করা যায়। তাই অ্যাপের প্রয়োজনও পড়ে না।

জন্ম নিবন্ধন যাচাই 19860915428117351

১৭ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন নাম্বারের মাধ্যমে Birth Certificate Check করা সম্ভব। তবে এই ১৭ ডিজিটের নাম্বারের (১৯৮৬০৯১৫৪২৮গা৭৩৫১) পাশাপাশি জন্ম তারিখ, মাস ও বছরের প্রয়োজন হবে। yyyy mm dd এই ফরমেটে তারিখ বসাতে হবে। YYYY মানে হলো বছর, MM মানে হলো মাস এবং DD মানে হলো তারিখ।

জন্ম নিবন্ধন যাচাই কপি ডাউনলোড

উপরে দেখানো পদ্বতি অবলম্বন করে আপনি জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে যাচাই করতে পারবেন এবং সঠিকভাবে যাচাই করলে আপনার সামনে আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদ (Birth Certificate) আসবে। যখন এই পৃষ্টাটি আসবে তখন আপনাকে Ctrl+P একসাথে চেপে ধরতে হবে। চেপে ধরার সাথে সাথে আপনার কম্পিউটারের সামনে একটি পপ-আপ উইন্ডো আসবে। এই উইন্ডো যখন আসবে তখন তা পিডিএফ (PDF) আকারে সেভ করার সুযোগ পাবে। অথবা আপনি চাইলে পৃষ্টাটিকে সরাসরি প্রিন্ট করার সুযোগ পাবেন। যেহেতু আপনি ডাউনলোড করবেন তাই Save বাটনে ক্লিক করুন। সেভ বাটনে ক্লিক করার পর কোন ফোল্ডারে সেভ করবেন তার Directory সিলেক্ট করে দিন। এভাবে আপনি সহজেই Birth Certificate Online Copy Download করে নিতে পারবেন।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী

এই আর্টিকেলটি নিয়ে আপনাদের মনে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন আসতে পারে। অথবা Jonno Nibondhon Jacai করতে গিয়ে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। এধরনের কিছু প্রশ্ন ও সমস্যার সমাধান নিচে তুলে ধরা হলো।

No Record Found লেখা আসে এর কারণ কি?

সঠিক Birth Registration ও Birth date লিখে সার্চ করার পর যদি No Record Found লেখা সে তাহলে বুঝে নিতে হবে আপনার জন্ম নিবন্ধনটি অনলাইন করণ করা হয়নি। অনলাইন করণ না হলে আপনাকে রেকর্ড দেখাতে পারবে না।

17 Digits Only লেখা আসার কারণ কি?

17 Digits only লেখা আসার কারণ হলো আপনাকে আপনার জন্ম নিবন্ধন রেজিস্ট্রেশন নাম্বারটি অবশ্যই ১৭ ডিজিটের দিতে হবে। ১৭ ডিজিটের নিচে কোন জন্ম নিবন্ধন হয় না। যদি ১৭ ডিজিটের কম সংখ্যা আপনার Birth Certificate এ থাকে তাহলে বুঝে নিতে হবে আপনার জন্ম নিবন্ধনটি ডিজিটাল নয়।

Expected format: yyyy-MM-dd only আসার কারণ কি?

এই সমস্যার আসার কারণ হলো সঠিক ফরমেটে জন্ম সাল, মাস ও তারিখ না দেওয়া। আপনার জন্ম তারিখ যদি ১৬ জানুয়ারি ২০০২ সাল হয় তাহলে সেখানে 2002-01-16 এভাবে লিখে দিতে হবে। অথবা ওই ইনপুট বক্স থেকে সঠিক জন্ম সাল, তারিখ ও মাস সিলেক্ট করে দিতে হবে।

Captcha is not valid কেন আসতিছে?

Captcha is not valid লেখার আসার কারণ হলো ভুল ক্যাপচার ইনপুট করা। আপনি যদি ভুল ক্যাপচার দেন তাহলে এমনটা আসবে। Search বাটনের উপরে আপনি একটি ছবি পাবে। সেখানে একটি অংক হিসাব করতে বলবে। সেটি হিসাব করে ছবির নিচের ইনপুট বক্সে বসিয়ে ক্যাপচার পূরণ করতে হবে।

জন্ম সনদ ডিজিটাল না থাকলে কি করতে হবে?

আপনার জন্ম সনদ যদি ডিজিটাল করা না থাকে তাহলে এটিকে ডিজিটাল করে নিতে হবে। ডিজিটাল করার জন্য নতুন করে জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে হবে।

শেষ কথা

এই ছিল জন্ম নিবন্ধন যাচাই করা নিয়ে আমাদের আজকের এই আর্টিকেল। আশা করছি আপনি এই আর্টিকেলটি থেকে সঠিক পদ্বতিতে কিভাবে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন সনদ যাচাই করতে হয় তা শিখতে পেরেছেন। তবুও যদি এর পরেও আপনি কোন প্রকার সমস্যার সম্মুখীন হন তাহলে কমেন্ট করুন। আমি চেস্টা করব আপনার কমেন্টের উত্তর দেওয়ার মাধ্যমে আপনাকে সাহায্য করার।

আর্টিকেলটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন আপনার বন্ধু-বান্ধবদের কাছে যাতে করে তারাও এই সম্পর্কে অবগত হতে পারে। টিউনবিএনে ভিজিট করে এতক্ষণ সাথে থেকে আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

Imran Hossan

I am Imran, a student with the dream of becoming a professional developer, I love to explore, explore, learn interesting things on the Internet.

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Hey Dear!! Thank you for visit on TuneBN. Please Disable your AD Blocker to continue browsing.