Tips & Trick

মাস্টার কার্ড কি? মাস্টার কার্ড করার নিয়ম

Mastercard কি ও কিভাবে মাস্টার কার্ড করতে হয় তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা

স্বাগতম আপনাকে টিউনবিএনের নতুন আরেকটি টিউন/ আর্টিকেলে। আজকের এই টিউনের আলোচনার মূল বিষয় হলো মাস্টার কার্ড করার নিয়ম। মাস্টার কার্ড (Mastercard) কি, মাস্টার কার্ড সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা, কিভাবে মাস্টার কার্ড করবেন ইত্যাদি সকল বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন এই টিউন হতে। যারা এই সম্পর্কে জানেন না কিংবা নতুন মাস্টার কার্ড করতে চাচ্ছেন আশা করছি এই আর্টিকেল/ টিউনটি তাদের জন্য অনেক হেল্পফুল হতে যাচ্ছে।

মাস্টার কার্ড  বর্তমান সময়ে অনেক জনপ্রিয় একটি কার্ড বিশেষ করে ফ্রিল্যান্সারদের নিকট। শুধু যে এটি ফ্রিল্যান্সারদের নিকট জনপ্রিয় তা কিন্তু নয়। যারা আন্তর্জাতিক ভাবে বিভিন্ন পণ্য ক্রয় বিক্রয় করে কিংবা বিভিন্ন দেশের প্রাশয়ই ভ্রমণ করে থেকে তাদেরও কাছে মাস্টার কার্ড অনেক জনপ্রিয়।

বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সারদের নিকট এই কার্ডটির জনপ্রিয় মূল কারণ হলো সহজে পেমেন্ট নেওয়া যায় এবং টাকা ব্যাংকে ঝামেলা ছাড়া ট্রান্সফার করা যায়। এজন্য সকলেই মাস্টার কার্ড করতে চায়। কিন্তু, মাস্টার কার্ড করার নিয়ম সঠিক ভাবে জানা না থাকায় কার্ড করতে গিয়ে নানান ঝামেলা/ সমস্যার সম্মুখীন হয়। তাহলে চলুন এই বিষয়ে সঠিক তথ্য জেনে নেওয়া যাক।

আরো পড়ুনঃ

মাস্টার কার্ড কি?

মাস্টার কার্ডের ছবি

সোজা ভাষায় বলতে গেলে মাস্টার কার্ড হলো এমন একটি কার্ড যে কার্ডের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সহজে পেমেন্ট রিসিভ/ গ্রহণ অথবা টাকা পাঠানো/ গ্রাহণ করা সম্ভব।

আপনার যদি একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকে তাহলে আপনি আপনার ব্যাংক থেকে ডেভিড কার্ড/ ক্রেডিট কার্ড করে নিতে পারবেন। আর সেই কার্ড দিয়ে শুধুমাত্র দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন ধরনের ট্রানজিকশন করতে পারবেন। কিন্তু, দেশের বাইরে আপনার এই কার্ড একদম অচল ও এই কার্ডের কোন কাজ নেই।

এই সমস্যা সমাধানের জন্য Mastercard Inc. নামক প্রতিষ্ঠান মাস্টারকার্ড (Mastercard) নামের একটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সেবা চালু করে। যে সেবার মাধ্যমে দেশ, দেশের বাইরে বৈধভাবে ট্রানজিকশন করা যাবে এবং সহজে অন্য ব্যাংকে টাকা ট্রান্সফার ও উত্তেলন করা যাবে।

মাস্টার কার্ডের সুবিধা

যদি আপনি মাস্টার কার্ড করাতে চান তাহলে মাস্টার কার্ড করার নিয়ম জানার পাশাপাশি এর সুবিধাসমূহ/ ফিচারসমূহ সম্পর্কেও জেনে নেওয়া প্রয়োজন। তাহলে সঠিকভাবে এই কার্ড ব্যবহার করতে পারবেন এবং ব্যবহার করে মজা পাবেন। তাহলে চলুন মাস্টার কার্ডের সুবিধাগুলো জেনে নেই –

  • এই কার্ডের মাধ্যমে বিশ্বের যেকোন প্রতিষ্ঠানে পেমেন্ট করতে পারবেন কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়া।
  • ডুয়াল কারেন্সি কার্ড হওয়ায় অন্য দেশে গিয়েও এই কার্ড ব্যবহার করতে পারবেন।
  • বিভিন্ন পেমেন্টে ডিসকাউন্টের সুবিধা ও পয়েন্ট সংগ্রহ করতে পারবেন। আর পয়েন্টগুলো বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করে আরো অনেক ছাড় পাবেন।
  • এই কার্ডের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনেক ভালো। এছাড়াও কার্ডের মধ্যে টাকা সঞ্চয় করতে পারবেন।
  • ফ্রিল্যান্সারদের জন্য বিশেষ বিশেষ কিছু সুবিধা দিয়ে থাকে এই কার্ডটি।
  • ফ্রিতে এই কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন তবে, সর্বনিম্ন ১০০ ডলার Deposit (বাংলায় জমা) করে কার্ডটি একটি করতে হবে।
  • দেশের বাইরে যাওয়ার সময় কার্ডটি সাথে নিয়ে আরোহণ করতে পারবেন।

ইত্যাদি ইত্যাদি সুবিধা এই কার্ডটি ব্যবহার করে পাবেন। যার কারণে কার্ডটি এত বেশী জনপ্রিয়। মাস্টার কার্ডের সুবিধাসমূহতো জানলেনই এবার চলেন মাস্টার কার্ড করার নিয়মও জেনে নেওয়া যাক।

মাস্টার কার্ড করার নিয়ম

বাংলাদেশের প্রায় সকল ব্যাংকই মাস্টার কার্ডের সুবিধা দিয়ে থাকে এজন্য আপনাকে খুব বেশী ঝামেলা পোহাতে হবে না। তবে এজন্য আপনার একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে। যে ব্যাংকে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আছে সেই ব্যাংক যদি মাস্টার কার্ডের সুবিধার দিয়ে থাকে তাহলে নির্দিষ্ট কিছু ডকুমেন্ট সাথে নিয়ে ব্যাংকে গিয়ে এই সুবিধাটি চালু করে নিতে হয়। আর যদি মাস্টার কার্ডের সুবিধা দিয়ে না থাকে তাহলে এমন একটা ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট করে নিন যারা এই সুবিধাটি দেয়।

তো মাস্টার কার্ড করা জন্য আমাদের শুধুমাত্র দুইটি কাজ করতে হবে।

  • যে ব্যাংক মাস্টার কার্ডের সুবিধা দেয় সেই ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট তৈরি
  • মাস্টার কার্ড সুবিধাটি চালু করে নেওয়া

তাহলে মাস্টার কার্ড করার নিয়ম আরো বিস্তারিত আলোচনা করি।

ব্যাংক অ্যাকাউন্ট তৈরি

মাস্টার কার্ড করার নিয়ম এর শুরুতে ইতিমধ্যে বলেছি এমন একটা ব্যাংকে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করে নিতে হবে যারা এই সুবিধাটি দেয়। তাই এই সুবিধা দেওয়া যেকোন একটি ব্যাংক থেকে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট তৈরি করে নিন। যদি অ্যাকাউন্ট থাকে তাহলে এই ধাপটি এডিয়ে যান। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট তৈরির জন্য যেসব ডকুমেন্ট ও তথ্যর প্রয়োজন পড়বে –

  • আপনার পাসপোর্ট সাইজের ছবি (২/৪ টি)
  • জন্ম নিবন্ধন/ জাতীয় পরিচয় পত্র/ ডাইভিং লাইসেন্স
  • নমিনির পাসপোর্ট সাইজের ছবি (২/৪ টি)
  • নমিনির জাতীয় পরিচয় পত্র
  • আপনার সাক্ষর ও নমিনির সাক্ষর

এই সকল ডকুমেন্ট ও তথ্যাবলি থাকলে আপনি খুব সহজে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট তৈরি করে নিতে পারবেন। এবার মাস্টার কার্ড সেবা চালু করার পালা।

মাস্টার কার্ড সেবা চালু

মাস্টার কার্ড সেবা চালু করার জন্য অবশ্যই পাসপোর্ট থাকতে হবে। পাসপোর্ট না থাকলে আপনি মাস্টার কার্ড সেবা চালু করে দেশের বাইরে পেমেন্ট করতে পারবেন না। এছাড়াও মাস্টার কার্ড সেবা চালু করার জন্য আরো কিছু শর্ত ব্যাংক আপনাকে দিবে। সেই শর্তগুলো ব্যাংক ভেদে ভিন্ন। তাই সেই আপনি আপনার ব্যাংকে থেকে এই তথ্যগুলো জেনে নিবেন।

যদি পাসপোর্ট না থাকে তাহলে পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগ করে পাসপোর্ট করে নিন আগে। এই হলো মাস্টার কার্ড করার নিয়ম। অনেক সহজ পদ্বতি। তবে বর্তমান সময়ে পাইওনিয়ার মাস্টার কার্ড অনেক বেশী জনপ্রিয়।

পাইওনিয়ার মাস্টার কার্ড করার নিয়ম

পাইওনিয়ার মাস্টার কার্ড এর ছবি

পাইওনিয়ার মাস্টার কার্ড মূলত ফ্রিল্যান্সারদের জন্য। এটি ফ্রি ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার কার্ড। এই কার্ডের জন্য আপনি যেকোন ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস থেকে আবেদন করতে হবে। যেমনঃ ফাইভার, ফ্রিল্যান্সার ডট  কম ইত্যাদি। পাইওনিয়ার মাস্টার কার্ড ব্যবহারের জন্য পাসপোর্টের প্রয়োজন পড়বে না। শুধু মাত্র ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস থেকে আবেদন করতে হবে এবং কার্ডটি একটিভ করার জন্য ১০০ ডলার জমা করতে হবে।

ইসলামী ব্যাংক মাস্টার কার্ড করার নিয়ম

ইসলামী ব্যাংক মাস্টার কার্ড সেবা দিয়ে থাকে। আপনি চাইলে উপরোক্ত নিয়ম অনুসারে মাস্টার কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন ব্যাংক থেকে। Source: Islami Bank signs Agreement with Mastercard

দেশের মধ্যে ইসলামীক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, এবিএল ব্যাংকের মাস্টার কার্ড অনেক জনপ্রিয়। আপনি চাইলে ইসলামীক ব্যাংকের মাস্টার  কার্ড ব্যবহার করতে পারেন।

ফ্রি ভার্চুয়াল মাস্টার কার্ড

ফ্রি ভার্চুয়াল মাস্টার কার্ডও বর্তমানে অনেক জনপ্রিয় লাভ করছে। কিন্তু, এই ভার্চুয়াল কার্ডগুলো ব্যবহার করার চেয়ে না করাই ভালো। কেননা, ফ্রি ভার্চুয়াল মাস্টার কার্ডগুলো ব্যবহার করে অ্যাকাউন্ট লক, পুনারায় পেমেন্ট করার মতোন অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এই কার্ডগুলো ১০/ ২০/ ৫০/ ১০০ ডলার ইত্যাদি অ্যামান্টের লোড করা অবস্থায় কিনতে হয়।

ফ্রি ভার্চুয়াল মাস্টার কার্ড করার নিয়ম নেই কোন। নাম জান, অজানা বিভিন্ন কোম্পানি এই সেবাটি দেয়। তবে আমি আপনাকে কখনো রিকমেন্ট করব না ভার্চুয়াল মাস্টার কার্ড ব্যবহার করার জন্য।

উপসংহার

এই ছিল আমাদের আজকের টিউন/ আর্টিকেল। আশা করছি মাস্টার কার্ড করার নিয়ম নিয়ে এই লেখাটি আপনি উপভোগ করেছেন ও মাস্টার কার্ড নিয়ে আপনি প্রয়োজনীয় তথ্য এই টিউনে খুঁজে পেয়েছেন। আর্টিকেলটি লিখতে গিয়ে কোথাও কোন ভুল খুঁজে পেলে অবশ্যই তা ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন এবং ভুলটি কমেন্ট সেকশনে মেনশন করে দিবেন।

টিউনবিএনে ভিজিট এবং এতক্ষণ সাথে থেকে আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। টিউনটি শেয়ার করতে পারেন আপনার বন্ধু-বান্ধবদের সাথে ও আপনার মতামত জানাতে পারেন কমেন্ট সেকশনে।

Imran Hossan

I am Imran, a student with the dream of becoming a professional developer, I love to explore, explore, learn interesting things on the Internet.

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Hey Dear!! Thank you for visit on TuneBN. Please Disable your AD Blocker to continue browsing.